বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাল্টাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপ দেয়ার কথা জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে ৫ বার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তন করতে হয়েছিল।’
২৪ আগস্ট রোববার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ডা. রাজিবুল ইসলাম সাক্ষ্য দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি চন্দন আমাকে বলেন, আবু সাঈদের লাশ নিয়ে ব্যবসা চলছে। শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কনসার্ন আছেন। পুলিশ যেভাবে বলে তুমি সেভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিয়ে দাও।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে ৫ বার রিপোর্ট পরিবর্তন করতে হয়েছিল। কিন্তু একটি রিপোর্ট পুলিশ নষ্ট করতে বলে। পরে আমি সর্বশেষ ও চতুর্থ বারের রিপোর্টে আবু সাঈদের হত্যার বিস্তারিত উল্লেখ করলেও গুলির বিষয়ে উল্লেখ করিনি। আমি লিখেছিলাম উপরোক্ত কারণে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়েছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘আমি রাত ৩টা পর্যন্ত রিপোর্ট লিখছিলাম। আমার স্ত্রী এসে আমি কী লিখছি তা জানতে চাচ্ছিলো। আমার পরিবার নিয়ে আমি শঙ্কিত ছিলাম। আমাকে বিদেশ ভ্রমণ ও কক্সবাজার ফ্যামিলিসহ ঘুরে আসতে বলেছিল। বিনিময়ে তাদের কথামতো রিপোর্ট তৈরি করতে বলছিলো। কিন্তু আমি তাদের কথায় রাজি হইনি।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন।