শিরোনামঃ
পিআরের দাবিতে আন্দোলনকারীরা নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টায় নেমেছে: মির্জা ফখরুল পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহসানুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা: চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু ইতালির উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা একা গিয়ে কী করবো, সেফ এক্সিট নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধের সুষ্ঠু ও নির্মোহ বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: বিএনপির বিবৃতি আর কোনো সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই : প্রেস সচিব পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাবাহিনী
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন

দশ কমিশনের ৩৬৭ সুপারিশ; ৩৭টি বাস্তবায়িত হয়েছে

স্টাফ রিপেোর্টার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া বাকি ১০টি কমিশনের মোট ৩৬৭টি সুপারিশ আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৩৬৭টি সুপারিশের মধ্যে মোট ৩৭টি সুপারিশ এরইমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।

যেসব কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে সেই ১০টি কমিশন হলো: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুদক সংস্কার কমিশন, সংবিধান সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, শ্রম সংস্কার কমিশন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।

যে ৩৭টি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে সেগুলো হলো- নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা জারি, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নাগরিকদের পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করা, সরকারি সব দপ্তরে গণশুনানি নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের তদন্তপূর্ব আবশ্যিক অনুসন্ধান-ব্যবস্থা বিলোপ ও দুদক আইনের ধারা ৩২ এর ক বিলোপ।

এছাড়াও, উচ্চমাত্রার দুর্নীতি তদন্তে বিভিন্ন এজেন্সির সমন্বয়ে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন, সিএজি ও আইএমইডির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ, আদালতে ‘ইনফরমেশন ডেস্ক’ স্থাপন, আদালতে নারী ও শিশুদের জন্য স্বতন্ত্র স্থান, অনলাইনে সরকারি সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, আইনজীবীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় অন্যপক্ষে অন্য আইনজীবীর নিয়োগে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের বিষয়ে সুপ্রীমকোর্ট কর্তৃক সার্কুলার জারি- এসব সুপারিশও বাস্তবায়িত হয়েছে।

আরও যেসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে সেগুলো হলো, আইনগত সহায়তা কার্যক্রমের সঙ্গে মধ্যস্থতা কার্যক্রমকে সংযুক্তকরণ, দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করার জন্য দেওয়ানি কার্যবিধি সংশোধন, ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাক্ষী সুরক্ষা ও অপরাধের শিকার ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে আইনি কাঠামো তৈরি করা, পুলিশ, আইনজীবী, বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট সব সেবাপ্রদানকারীকে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা, নির্বাচন ব্যবস্থা সংষ্কার কমিশনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা (স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক) পর্যবেক্ষণ ও সাংবাদিক নীতিমালা (সংশোধন), হলফনামার খসড়া তৈরি করা, শ্রমখাত সংস্কার কমিশনের যুবক-শব্দের একটি একক সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রীড়া সংস্থায় নারী প্রতিনিধির সংখ্যাবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ সংশোধন করা।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে আশু বাস্তবায়নযোগ্য আরও যেসব সুপারিশ বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো হলো, প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বাধ্যতামূলক জীবন বীমা প্রচলন, যারা আত্মীয়-স্বজনের পাঠানো ভিসাতে বিদেশ যান তাদের জন্য নিজে ভিসা-প্রক্রিয়াকরণের সুযোগ রাখা ও অবৈধভাবে কোনো এজেন্সির নাম ব্যবহার বন্ধ করা, অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খোলা নিশ্চিত করা, প্রাক-অভিবাসন পর্যায়ে তাদের অধিকার ও সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য জানানো, ভাষা ও কর্ম সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা, দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, হেলথ কার্ড এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা, ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং একটি কেন্দ্রীভূত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা, শিল্পবিরোধ নিস্পত্তিতে ত্রিপক্ষীয় ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠনের ব্যবস্থা, গোপনীয়ভাবে অভিযোগ দায়েরের জন্য কার্যকর অনলাইন ও অফলাইন অভিযোগ নিস্পত্তি ব্যবস্থা গঠন করা, শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়ানো এবং উপযুক্ত এলাকায় সার্কিট কোর্ট গঠনের ব্যবস্থা নেওয়া, শিশুর বিকাশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করা, প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক ভেদে সব ধরনের শ্রমিক যেন শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্যসেবা পান তা নিশ্চিত করা, কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় যৌক্তিকভাবে ছুটি নির্ধারণ করা, কারখানা পরিদর্শন প্রতিবেদন পরিদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা করা, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ চিহ্নিত করে সুরক্ষা ও ঝুঁকি ভাতা নিশ্চিত করা, রোগব্যাধি ও দুর্ঘটনার হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রতি তিন বা ছয় মাস অন্তর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ, রাত্রিকালীন কাজের জন্য নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিধান ও নিয়োগকারীর পক্ষ থেকে পরিবহন নিশ্চিত করা এবং ট্যানারি শিল্পে স্বাস্থ্য ও রাসায়নিক ঝুঁকি বিবেচনায় বিশেষ প্রশিক্ষিত শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত সপ্তাহে বলা হয়েছিল মোট ১২১টি সুপারিশ বাস্তবায়নাধীন আছে। এরমধ্যে ১৪টি এরইমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। ১৪টির আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো বাস্তবায়নাধীন বা পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আজ (বৃহস্পতিবার) উপদেষ্টা পরিষদের ৩৮তম বৈঠকে আরও ২৪৬টি আশু করণীয় সংস্কার সুপারিশ আসে। তার মধ্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের ৮২টি, নারী সংস্কার কমিশনের ৭১টি, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সংস্কার কমিশনের ৩৭টি, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের ৩৩টি ও তথ্য সংস্কার কমিশনের ২৩টি সুপারিশ আশু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ ও সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।


এ জাতীয় আরো খবর...