শিরোনামঃ
পিআরের দাবিতে আন্দোলনকারীরা নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টায় নেমেছে: মির্জা ফখরুল পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহসানুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা: চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু ইতালির উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা একা গিয়ে কী করবো, সেফ এক্সিট নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধের সুষ্ঠু ও নির্মোহ বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: বিএনপির বিবৃতি আর কোনো সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই : প্রেস সচিব পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাবাহিনী
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন

দাগনভূঞা বিএনপিতে অস্থিরতা; কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভ

বিশেষ প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫
দাগনভূঞায় বিএনপির সংঘাত থামাতে হিমশিম পুলিশ: ছবি-কলকণ্ঠ

ফেনীর দাগনভূঞায় বিএনপির রাজনীতি নিয়ে অস্থিরতা কাটছেইনা। দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে নেতাকর্মীরা। দলীয় কর্মসূচিও পালন করছেন আলাদাভাবে। নিজেদের মধ্যে প্রায়শই চলছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। হামলা-মামলায় জড়াচ্ছে দৃশ্যত দুই গ্রুপ। মূল দলের মতোই অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও দুইভাগে বিভক্ত। জেলার নেতারাও বিভক্তি হয়ে আছে দাগনভূঞার রাজনীতি নিয়ে। তার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে বিভাগ এমনকি কেন্দ্র পর্যন্ত। সবশেষ ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিজয় র‍্যালিতে হামলা করে আরেক গ্রুপ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ র‌্যালির নেতৃত্ব দেন উপজেলা আহবায়ক আকবর হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব কামরুল উদ্দিন, পৌর আহবায়ক বাবুল ও সদস্য সচিব হুমায়ুন কবীর বাবু। অংশ নেন আট ইউনিয়ন ও পৌর নেতৃবৃন্দ।

আন্তকোন্দলের যাতাকলে পড়ে অনেকটা খালি মাঠেও উপজেলা সদরে অবস্থান করতে পারছেনা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গ্রুপিংয়ের ফাঁদে পড়ে বলির শিকার ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাকর্মীদের অনেকে পিছনের সারিতে চলে যাচ্ছেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে নিজেদের বহর ভারি করতে ৫ আগস্টের পর অনুপ্রবেশকারীদের শ্লোগানের বহরে জায়গা দিচ্ছে দুই গ্রুপই। এতে করে ১৬ বছর মামলা, হামলার শিকার হয়ে ঘরছাড়া বিএনপির কর্মীরা এখনও মাঠছাড়া। অনেক নেতাকর্মী বলছে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনের চিত্র বর্ণনা করা গেলেও গত এক বছরের মানসিক যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না।

যেভাবে মুখোমুখী দুই গ্রুপ:

গত বছরের ২২ ডিসেম্বর বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আকবর হোসেনকে আহবায়ক, দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মামুদুল হক মাদু যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে দাগনভূঞা উপজেলা এবং বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি সফিকুর রহমান বাবুলকে আহবায়ক, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান স্বপনকে যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বাবুকে সদস্য সচিব করে পৌর কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। জেলা সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল একক স্বাক্ষরে দুই কমিটি ঘোষণা দিলেই তা প্রত্যাখ্যান করে পদবঞ্চিতরা। যদিও প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দাগনভূঞায় দলটির নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্ত নেতাকর্মীরা।

৭ মাসেও নেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি:

এদিকে দলের প্রতি ভালবাসা থেকে রাজনীতি করেন এমন স্থানীয় কয়েকজন মতে পদ পাওয়াটা বড় বিষয় নয়, দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলে জনগনের সমর্থন পাওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে স্থানীয় নির্বাচন হলে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ যেমন কঠিন হবে, ভোটারদের পক্ষে আনাও তেমন কষ্টকর হবে বলে মনে করেন বিএনপির কর্মী সমর্থকরা। তাদের মতে আন্তকোন্দলের প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় নির্বাচনেও। তিন সদসস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণার ৭ মাস পরেও পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি না হওয়ায় ক্ষোভ জানান স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

বহিস্কার দিয়ে মাঠ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা?

এদিকে পদবঞ্চিত দাবি করা নেতারা বলছেন, তাদের পক্ষের লোকদের দল থেকে বহিস্কার করে আকবর হোসেন মাঠে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।  এরইমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ফেনী জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সবুজ ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জামশেদুর রহমান ফটিককে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। দুইজনই আকবর বিরোধী রিপন-স্বপন গ্রুপের সক্রিয় কর্মী। তারপরও তারা বিএনপির ব্যানারে আকবর বিরোধী কমর্সূচিতে অংশ নিচ্ছেন। অবশ্য সবুজের সাথে জেলা যুবদলের আরেক সদস্য নাসির উদ্দিনকেও বহিস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তা প্রত্যাহার করা হয় বহিস্কারাদেশ।

দাগনভূঞায় বিএনপির সংঘাত থামাতে হিমশিম পুলিশ: ছবি-কলকণ্ঠ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদ আর ক্ষোভের লড়াই:

পদে যেতে আগ্রহ নেই এমন অনেক কর্মী-সমর্থকের মতে বিরোধ নিরসন করতে দাগনভূঞা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব ধরণের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা দরকার। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ, ক্ষোভের পাশাপাশি পরামর্শ মূলক পোস্ট করছেন কর্মী-সমর্থকরা। একইভাবে একে অন্যেক ঘায়েল করার টার্গেট করেও পোস্ট দিচ্ছেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগও তুলে ধরছেন নেতারা। অনেক নেতাকর্মীই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কাধা ছোড়াছুড়ি করছেন।

ফেনী জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য পেয়ার আহমদ আকাশের ফেসবুক স্টাটাস

অনুপ্রবেশের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ:

দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপিতে অনুপ্রবেশ ও ব্যক্তি সুবিধার বিনিময়ে অন্য দলের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগও কম নেই। অনেক আওয়ামী লীগ ও জাসদ ছেড়ে বিএনপির পতাকাতলে ভিড়েন। এরমধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মাহবুবুল হক রিপন ও রফিকুল ইসলাম আসেন জাসদ ছেড়ে। আর আবুল হাসেম বাহাদুর আসেন আওয়ামী লীগ থেকে। রামনগর ইউনিয়নের আবদুল কাদেরও বিএনপিতে আসেন জাসদ ছেড়ে। যুবদল সভাপতি কবীর আহমদ ডিপলু আসেন ছাত্রলীগ (জয়নাল হাজারীর ক্লাস কমিটি) থেকে। জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সবুজ আসেন যুবলীগ থেকে। পেয়ার আহমদ আকাশ শিবির ছেড়ে জেলা যুবদলের সদস্য হন। তবে দলবদল করা সবাই দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিরোধী কর্মসূচিতে আকবর হোসেনের পক্ষ হয়ে আবার কেউ তার বিপক্ষ গ্রুপের পক্ষে মাঠে ছিলেন।  সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাগনভূঞা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন বিএনপির ২/১জন নেতা নিজেদের পাল্লা ভারী করার জন্য অনেক আওয়ামী লীগকে নিজের দলে টেনে নিয়েছে। পুরো কিশোর গ্যাং এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

উপজেলা ও পৌর কমিটি অনুপ্রবেশের বাহিরে:

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর নেতৃত্ব মানতে অনেকে অস্বীকৃতি জানালেও উপজেলা ও পৌর কমিটির ছয় নেতার কেউই বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী নন। উপজেলা আহবায়ক আকবর হোসেন ও সদস্য সচিব কামরুল উদ্দিন ছাত্রদল থেকে পর্যায়ক্রমে মূল দলের নেতৃত্বে স্থান পান। আর যুগ্ম আহবায়ক বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকেই উপজেলার বিভিন্ন পদে আছেন। একই অবস্থা পৌর নেতৃত্বেও। আহবায়ক সফিকুর রহমান বাবুল, যুগ্ম আহবায়ক সাইফুর রহমান স্বপন ও সদস্য সচিব হুমায়ুন কবীর বাবু ছাত্রদল থেকে যুবদল হয়ে বিএনপিরে নেতৃত্বে জায়গা করে নেন।

হামলায় আহত যুবদল নেতা এনায়েত উল্যাহ সোহেল: ছবি- কলকণ্ঠ

গ্রুপ পরিবর্তন:

বর্তমান কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন, উপজেলা সদর ছাড়াও জেলাতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সমাবেশ করছে পদপ্রত্যাশীরা। এসব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে ছাত্রদল, যুবদলসহ অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। কোন্দল মিটিয়ে এক সাথে কাজ করার প্রয়াস হিসেবে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। কমিটি পরিবর্তনের সুযোগ নেই জানিয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান নেতারা। ওই বৈঠক থেকে ফিরেই ফের আন্দোলনে নামে পদবঞ্চিতরা। বিরোধতো মিটছেইনা, বরং দিন যতই গড়াচ্ছে ক্ষোভ আর প্রতিহিংসা বাড়ছে। অবশ্য এরমধ্যে বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী নেতা আকবর হোসেনের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আন্দোলন ছেড়ে আহবায়ক কমিটির সাথে কাজ করছেন। এরমধ্যে রিপন-স্বপন গ্রুপে থাকলেও জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সম্পাদক নাসির উদ্দিন এখন আকবরের সিপাহী। একই অবস্থা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন ভূঞা হুদনের। তিনি রিপন-স্বপন গ্রুপ ছেড়ে এখন আকবর গ্রুপে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলামও এখন আকবর গ্রুপে। অন্যদিকে সাইফুর রহমান রতন ও পেয়ার আহাম্মদ আকাশ আকবরের সঙ্গ ছেড়ে বিপক্ষ গ্রুপে সক্রিয়।

হামলায় আহত মহীলা দল নেত্রী জাহানারা

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি:

প্রায়শই পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ কারনে জনসমর্থনে ভরা দলটি শোডাউন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সবশেষ ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে উপজেলা ও পৌর বিএনপির ব্যানারে পৃথক বিজয় র‍্যালি করে দুই গ্রুপ।

আকবর হোসেনের নেতৃত্বে দাগনভূঞায় বিএনপির বিজয় র‌্যালি: ছবি-কলকণ্ঠ

মিন্টু প্রভাবের অভিযোগ:

অভিযোগ উঠেছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর প্রভাব খাটিয়ে তার ছোট ভাই আকবর হোসেন বার বার দাগনভূঞার রাজনীতি নিজের ঘরে আবদ্ধ করে রেখেছেন। আর কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারাও মিন্টুর প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে আছেন। যদিও কেন্দ্র ও জেলার কোন নেতাই এমন বক্তব্য মানতে রাজি নন।

সাইফুর রহমান স্বপনের নেতৃত্বে বিজয় র‌্যালি

কর্মী-সমর্থকদের চাওয়া:

দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-৩ আসনে ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক আকবর হোসেন। সে সময়েও বিএনপিতে বিভক্তি থাকলেও আকবরের পক্ষে একাট্টা ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আগের রাতে ভোট না হলে ধানের শীষের প্রার্থীই বিজয়ী হতেন বলে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
বর্তমান পেক্ষাপট ভিন্ন দাবি করে অনেকে বলছেন, দলীয় কোন্দল শিগগিরই না মিটলে করুন পরিনতি ভোগ করতে হতে পারে বিএনপিকে। তার প্রমাণ হিসেবে নেতাকর্মীরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকবার হামলা, সংঘর্ষ ও মামলায় জড়িয়েছে বিএনপি। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে আকবর হোসেনকেও।

স্থানীয় নেতাদের বাহাস:

দাগনভূঞা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সভাপতি প্রত্যাশী সাইফুর রহমান স্বপন বলেন, ত্যাগী নেতাদের মূল্যয়ন করা হয়নি নতুন কমিটিতে। কোন্দল নিরসনে নতুন করে উপজেলা ও পৌর কমিটি ঘোষণার দাবিও জানান স্বপন। উপজেলা ও পৌর কমিটির সদস্য সচিব আওয়ামী লীগ সময়ে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে রাজনীতি থেকে অনেকটা অবসরে ছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
একই বক্তব্য উপজেলা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী মাহবুবুল হক রিপনের। তিনি বলেন, এক বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপি। দীর্ঘ বছর নেতাকর্মীরা আন্দোলন, জেল জুলুম খেটেছে নেতৃত্ব লাভের আশায়। জেলা সদস্য সচিবের একক স্বাক্ষরে কমিটি কোনভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন রিপন।

আরও পড়ুন:  দাগনভূঞায় বিএনপির বিজয় র‌্যালি

পৌর সদস্য সচিব হুমায়ুন কবীর বাবু বলেন, ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী এমন কোন কর্মসূচি নেই যে কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেননি। ছাত্রদল ও যুবদলের নেতৃত্বে সফলতার পুরস্কার হিসেবে বিএনপিতে পদ পেয়েছেন বলেও মনে করেন তিনি।
আর উপজেলা সদস্য সচিব কামরুল উদ্দিন বলেন, কমিটিতে কে স্থান পেয়েছে তা বড় কথা নয়, বিএনপিকে ভালবাসে এমন সবাইকে নিয়েই দলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পক্ষে আহবায়কসহ সবাই।

উপজেলা আহবায়ক আকবর হোসেন বলেন, দলে নেতা হওয়ার মতো যোগ্য অনেকেই আছেন, তবে সবাইতো এক পদে স্থান পাবেন না। উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটি দিয়েছে জেলা কমিটি উল্লেখ করে আকবর হোসেন জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলে সব ক্ষোভ দূর হবে। বিএনপির কমিটি নিয়ে আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই অংগ সংগঠনের জানিয়ে তিনি বলেন, দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলকে সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।

জেলা নেতারাও বিভক্ত:

ফেনী জেলা সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ফেনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতার পরামর্শে দাগনভূঞা উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর জেলা আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে জেলা ও উপজেলা বিএনপিতে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। দুই উপজেলার যে চারটি কমিটি দেওয়া হয়েছে, তা ভুয়া ও অগঠনতান্ত্রিক।


এ জাতীয় আরো খবর...