প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেও নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন তুঙ্গে। এখন একজন নতুন নেতার দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। আর তাদের মতে, বালেন্দ্র শাহকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা উচিত।
বালেন্দ্র শাহ কাঠমান্ডুর মেয়র এবং একজন স্বাধীন রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু রাজনীতি করেন না, বরং একজন র্যাপার, সঙ্গীতশিল্পী, কবি হিসেবেও পরিচিত। জনপ্রিয়তার কারণে বিক্ষোভকারীরা তাকে নতুন নেতা হিসেবে দেখতে চাইছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
প্রেসিডেন্ট ভবন এবং ওলির বাসভবনের আশপাশে আগুন ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীর ওপর পাথর ছুঁড়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার ও মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ওলি পদত্যাগ করবেন না। তবে টানা বিক্ষোভ এবং জনগণের চাপের মুখে তাকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
অনেকের দাবি, এখন পুরো নেপাল বালেন্দ্র শাহ’র সম্ভাব্য নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি কি সত্যিই নেপালের ভবিষ্যৎ নেতা হবেন? – এ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে।
কে এই বালেন্দ্র শাহ?
বালেন্দ্র শাহ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯০ সালের ২৭ এপ্রিল, কাঠমান্ডুতে। তিনি একটি মৈথিল-মধেশি পরিবার থেকে এসেছেন। নেপালে হিপ-হপ ও র্যাপ সঙ্গীতের একজন পরিচিত মুখও তিনি।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন বালেন্দ্র।
২০২২ সালে বালেন্দ্র শাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হন। তিনি পরিচিত আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও অবৈধ নির্মাণ অপসারণের মতো উদ্যোগের জন্য। তার কাজ তাকে জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় ও বিশ্বাসযোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মেয়র হিসেবে বালেন্দ্র শাহ কাঠমান্ডুতে স্বচ্ছ প্রশাসন এবং আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেন। তিনি নগর পরিষদের বৈঠকগুলো সরাসরি সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করেন এবং অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন।
তবে তার নীতিগুলো নিয়ে কিছু বিতর্কও হয়েছে — যেমন: নদীর তীরবর্তী অবৈধ দখল উচ্ছেদ, এবং ফেডারেল সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব।
তবুও বালেন্দ্রর জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর...