ফেনীর পরশুরামে একটি অকেজো স্লুইস গেট ১০ গ্রামের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাপ্তান বাজার এলাকায় কহুয়া নদীর স্লুইস গেট যান্ত্রিক ত্রুটিতে অকেজো হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষিজমি, ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ।
উপজেলার বক্সমাহমুদ-ছাগলনাইয়া সড়কে খন্ডলহাই বাজারের উত্তর পাশে বয়ে গেছে কহুয়া নদী। কহুয়া নদীতে এসে মিশেছে ভারত থেকে নেমে আসা মতাই ছড়া খাল। পশ্চিম বাগমারা গ্রামের কহুয়া নদী ও মতাই ছড়া খালের সংযোগস্থলে ২০০৫ সালে প্রকল্পের মাধ্যমে সুইস গেটটি নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় সুইসগেটটি একেবারে ছোট। বন্যা শুরু হলে নরনীয়া, কেতরাঙ্গা, পশ্চিম বাগমারা, পূর্ব বাঘমারা, জমিয়ারগাঁও, গুথুমা ও চারিগ্রামের পানি মতাই ছড়া খাল হয়ে কহুয়া নদীতে এসে পড়ে। সুইস গেটটি সরু হওয়ায় পানি স্বাভাবিকভাবে নদীতে না গিয়ে আটকে থাকে। এছাড়া পানির চাপে অনেক সময় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পড়ে। ফলে এসব গ্রামের জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফ্লুইস গেটটি অকেজো থাকায় বোরো মৌসুমে মতাই ছড়া খালে পানি ধরে রাখা যায় না। খালে পানি না থাকায় জমিতেও সেচ দেওয়া সম্ভব হয় না।
পূর্ব বাগমারা গ্রামের বাসিন্দাদের মতে, নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যেই ব্লুইস গেটটি নষ্ট হয়ে যায়। শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখা যায় না। বন্যার সময় লোকালয়ে পানি চলে আসে। এটি বড় পরিসরে নির্মাণ করা হলে কৃষক ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
জমিয়ার গাঁওয়ের বাসিন্দারা জানান, মতাই ছড়া খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় ভরাট ও সরু হয়ে গেছে। এতে বোরো মৌসুমে খালে পানি কম থাকায় কৃষকরা অনেক জমি চাষাবাদ করতে পারেন না। ব্লুইসগেট ছোট হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই বাগমারা ও জমিয়ারগাঁওসহ অনেকগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়।
পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্লুইসগেটটি কোনো কাজে আসছে না। এটি মেরামত করা প্রয়োজন।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউসুফ আহমেদ সুইসগেট অকেজো হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, পাউবোর মেকানিক্যাল বিভাগ যান্ত্রিক ত্রুটি চিহ্নিত করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে।