৪৫ দিন টানা অবকাশকালীন ছুটির পর আগামীকাল খুলছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রীতি অনুযায়ী অবকাশকালীন এই ছুটি পর প্রথম দিন প্রধান বিচারপতি একটি চা চক্র ও সৌজন্য সাক্ষাতের আয়োজন করেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট ইনার গার্ডেনে যা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতিসহ সাধারণ আইনজীবীরা উপস্থিত থাকবেন। এদিন দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে বিচারিক কার্যক্রম। রোববার থেকে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য ৬৬ বেঞ্চ পূর্ণগঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
তবে এবার সবার নজর থাকবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর মামলার দিকে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগে আগামী ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানির পর এ বিষয়ে আপিল শুনানির আবেদন (লিভ গ্রান্ট) মঞ্জুর করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০১১ সালের ১০ মে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। এরপর ওই বছরের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এই আইনের গেজেট প্রকাশ করা হয়।
তবে এই সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও একজন ব্যক্তি আবেদন করেন।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।
এই মামলার নিষ্পত্তির পর সংজ্ঞায়িত হতে পারে ইউনুস সরকারের অন্তর্বর্তী সরকারও। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এ মামলায় আপিল বিভাগ কি রায় দেন তার ওপর নজর থাকবে সবার।