শিরোনামঃ
পিআরের দাবিতে আন্দোলনকারীরা নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টায় নেমেছে: মির্জা ফখরুল পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহসানুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা: চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু ইতালির উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা একা গিয়ে কী করবো, সেফ এক্সিট নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধের সুষ্ঠু ও নির্মোহ বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: বিএনপির বিবৃতি আর কোনো সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই : প্রেস সচিব পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাবাহিনী
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন

কলকাতায় ‘দলীয় কার্যালয়’ খুলেছে আওয়ামী লীগ !

কলকণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়- ফাইল ছবি

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী পালিয়ে প্রতিবেশি দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে তারা শুধু নিরাপদে অবস্থানই করছে না, ‘দলীয় কার্যালয়’ খুলে রাজনৈতিক কার্যক্রমও চালাচ্ছে। খবর বিবিসি বাংলার

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কলকাতা লাগোয়া একটি উপনগরীর ব্যস্ততম
এলাকায় বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে খোলা হয়েছে সেই কার্যালয়।  সেখানে নিয়মিতিই ভিড় করেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলির শীর্ষ এবং মধ্যম স্তরের নেতারা।

বিবিসি জানিয়েছে, এর আগে, ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরের কয়েক মাসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তারা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বৈঠক বা দলীয় দফতরের কাজকর্ম চালাতেন নিজেদের বাসাবাড়িতেই। আর বড় বৈঠকগুলো হত কোনো রেস্টুরেন্ট কিংবা ব্যাঙ্কয়েট হল ভাড়া করে। সেকারণেই একটা নির্দিষ্ট ‘পার্টি অফিস’এর দরকার ছিল বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা।

কীরকম সেই ‘পার্টি অফিস’?

একটি বাণিজ্যিক ভবনের আট তলায় লিফট দিয়ে উঠে বাঁদিকে গেলেই সারি সারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। স্টে করিডোরের দুদিকে হাল্কা বাদামী রঙের একের পর এক দরজা। তারমধ্যেই একটিতে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস। শুধু বাইরে কেন, পাঁচশো বা ছয়শো স্কোয়ার ফুটের ঘরটিতে উঁকি মারলেও কেউ বুঝতে পারবেন না যে এই ঘরটির সঙ্গে কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জড়িত আছে।  সেখানে সেই কোনো সাইন বোর্ড, শেখ হাসিনা অথবা শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো ছবি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতা বিবিসিকে বলেন, “কোনো ছবি, সাইনবোর্ড কোনো কিছুই আমরা রাখিনি খুবই সচেতন ভাবে। আমরা চাইনি এই ঘরটার পরিচিতি প্রকাশ করতে। এমনকি একটা দলীয় কার্যালয়ে যেসব ফাইল ইত্যাদি থাকে, সেসবও এখানে রাখা হয় না। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ, বৈঠক ইত্যাদির জন্য একটা ঘর দরকার ছিল, এটা পাওয়া গেছে। এটাকে আমরা পার্টি অফিসই বলি, কিন্তু আদতে এটা একটা বাণিজ্যিক অফিস। আগে যে সংস্থা কাজ করত এখানে, তাদেরই ছেড়ে যাওয়া চেয়ার, টেবিল এসবই আমরা ব্যবহার করি।

ওই নেতা জানান, ৩০-৩৫ জনের বৈঠক এই কার্যালয়ে করা যায়, কিন্তু একটু চাপাচাপি করে বসতে হয়। ছোটখাটো বৈঠক বিভিন্ন নেতাদের বাসাবাড়িতে এখনও হয়। তবে বড় বৈঠকগুলো, যেখানে শ দুয়েক নেতাকর্মী হাজির হওয়ার কথা, সেরকম বৈঠকের জন্য কোনো ব্যাঙ্কয়েট হল বা কোনো রেস্টুরেন্টের একটি অংশ ভাড়া নেওয়া হয়।

কারা যাতায়াত করেন ‘পার্টি অফিসে’?

গত বছরের পাঁচই অগাস্টের পর বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলির অনেক শীর্ষ নেতা এবং সাবেক মন্ত্রীই কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। এর বাইরে বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি কর্মচারী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও চলে এসেছেন ভারতে। মাস ছয়েক আগে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানিয়েছিল যে অন্তত ৭০ জন সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি-সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র সহ শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় ২০০ জন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে থাকছেন।

এদের কেউ সপরিবারে থাকেন, আবার কোথাও একসঙ্গে কয়েকজন মিলেও একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। কারও পরিবার মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে এসেও কিছুদিন কাটিয়ে যান।

কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাস করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘পার্টি অফিসে’ যাতায়াত করে থাকেন।

আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘তবে অফিস খোলার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যেরকম প্রয়োজন, সেরকমই আসেন নেতারা। আবার প্রতিদিনরই যে সবাই আসেন, তাও নয়। আসলে প্রয়োজনীয়তা ছিল একটা নির্দিষ্ট জায়গা গড়ে তোলা, সে জন্যই এই পার্টি অফিস।’

আরও পড়ুন:  শেখ হাসিনার পতনকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ

বিবিসি জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের এই নতুন পার্টি অফিসের ব্যাপারে ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষ কিছুই জানেন না। দলেরও কোন স্তরের নেতা-কর্মীরা এই অফিসেরে ব্যাপারে কতটা জানেন, সেটা জানা যায়নি। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে ভারতীয় গোয়েন্দারা এই অফিসের ব্যাপারে জানেন এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্তরের অনুমোদন ছাড়া এই দলীয় অফিস থেকে আওয়ামী লীগের কাজকর্ম চলতে পারত না।


এ জাতীয় আরো খবর...