বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ সফরে মোদি ফের অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে সরব হয়েছেন। শুক্রবার বিহার সফর শেষে পশ্চিমবঙ্গে এসেও অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে সুর ছড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতের কাছে সম্পদ কম। যুব সমাজকে উপার্জন দিতে হবে, নাগরিকদের সুবিধা দিতে হবে। অনুপ্রবেশকারীরা রোজগার কেড়ে নিচ্ছে। নাগরিকদের অধিকারে ভাগ বসাচ্ছে। মা-বোনেদের সম্মানে হাত দিচ্ছে। মোদি অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। ভোটব্যাঙ্কের জন্য প্রশ্রয় দিচ্ছে। জমি কেলেঙ্কারি হচ্ছে। কৃষকের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, আদিবাসীদের জমি দখল করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি লালকেল্লা থেকেও বলেছি, অনুপ্রবেশকারীদের যেতেই হবে। যারা নকল কাগজপত্র নিয়ে এখানে রয়েছেন তাদের এখান থেকে যেতেই হবে। এই ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকেও এখান থেকে বিদায় নিতে হবে।
এদিন বিহারের জনসভাতেও মোদি বলেন, দেশে অবৈধ অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা উদ্বেগের বিষয় । বহু জায়গাতেই দ্রুত বদলে যাচ্ছে জনসংখ্যার বিন্যাস। বিশেষ করে বিহার-বাংলার সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে। আমি চাই না বিহারের তরুণ প্রজন্মের উপার্জনের পথ অনুপ্রবেশকারীরা বন্ধ করে দিক। তাই যে সব দল এই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থনে গলা ফাটাচ্ছে, তাদের চিনে রাখুন।
পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের মত রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে অনুপ্রবেশকারী যে প্রধান ইস্যু হচ্ছে তা মোদির ভাষণ থেকে স্পষ্ট হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকদের মত।
শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে কংগ্রেস, তারপর বামেদের শাসন দেখেছে বাংলা। ১৫ বছর আগে আপনারা মা-মাটি-মানুষে বিশ্বাস করে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে আগের চেয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ‘ক্রাইম’ এবং ‘করাপশন’ তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের পরিচিতি। এটা পাকা যে, যত দিন বাংলায় তৃণমূলের সরকার থাকবে, তত দিন বাংলায় উন্নয়ন থমকে থাকবে। তৃণমূল গেলে তবেই আসল পরিবর্তন আসবে।
মোদি অভিযোগ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের জন্য যে অর্থ আমরা সরাসরি রাজ্য সরকারকে পাঠাই, তার বেশির ভাগ লুট হয়ে যায়। আপনাদের জন্য খরচ হয় না। তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাডারদের জন্য খরচ হয়। এই জন্য জনকল্যাণে পিছিয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ।
প্রধানমন্ত্রী এদিন কলকাতা মেট্রো রেলওয়ের ৩টি রুটের সূচন করেন। এছাড়া ৫২০০ কোটিরও বেশি রুপি মূল্যের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের শিলান্যাসও উদ্বোধন করেন।
এদিন দুপুরে বিহারের জনসভা থেকেও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, এনডিএ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অবৈধ অভিবাসীদের আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে দেওয়া হবে না। আমরা অভিবাসীদের বিহারের জনগণের জন্য নির্ধারিত চাকরি কেড়ে নিতে দেব না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা বিন্যাস সংক্রান্ত এই হুমকি মোকাবিলা করার জন্য আমি একটি জনসংখ্যাতাত্ত্বিক মিশন শুরু করার প্রস্তাব করেছি। এই মিশন শীঘ্রই তার কাজ শুরু করবে। আমরা প্রত্যেক অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করব।