বাংলাদেশ জেলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের উদ্যোগ নিয়েছে কারা অধিদপ্তর। নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কারা সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
বন্দিদের খাবার নিয়ে তিনি বলেন, বন্দিদের খাবারের মেন্যুতে প্রোটিনের পরিমাণ ইতোমধ্যেই স্বল্প পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে এবং তা যৌক্তিক পর্যায়ে বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল এবং ইতোমধ্যে তার অনুমোদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সকালের নাস্তা এবং বিশেষ দিবসের জন্যও খাদ্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
বন্দিদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আইজি প্রিজন বলেন, বন্দিদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কেরাণীগঞ্জে ‘কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল’ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীও সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। বন্দিদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে বিভিন্ন কারাগারে স্থান সংকুলান সাপেক্ষে নানাবিধ খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানাবিধ মনন চর্চার সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের সংশোধনের নিমিত্তে ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানাবিধ কাউন্সিলিং এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
কারা অধিদপ্তরের চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্তদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি বলেন, অবসরগামী কারারক্ষীদের আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়টি সরকার নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছেন, যা বর্তমানে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উন্নতমানের প্যাকেটজাত রেশন দ্রব্যাদি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিশেষ দিবসে খাবার পরিবেশনের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ করা হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শারীরিকভাবে যোগ্য রাখার স্বার্থে ওয়েট চার্ট সুনির্দিষ্ট করণসহ পিটি-প্যারেড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত দ্রব্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।
এ সময় তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে বলেন, বিগত সময়ের চ্যালেঞ্জসমূহ থেকে উপলব্ধি করে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কারারক্ষী গড়ে তুলতে আমরা সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যুগোপযোগী/টেকনোলজি নির্ভর প্রশিক্ষণের মডিউল তৈরি করে প্রশিক্ষণ প্রদান করছি। বিগত এক বছরে ৬৯১ জন কারারক্ষী, ১৫০ জন প্রধান কারারক্ষী, ৬৯ জন সর্বপ্রধান কারারক্ষী, ৩০ জন সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর, ৫৫ জন ডেপুটি জেলার ও জেলারগণকে বিভিন্ন পেশাগত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
মাদকাসক্তির বিষয়ে জিরো টলারেন্স কঠোরনীতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১ বছরে মাদকসেবী ২৯ জন সদস্যকে মাদক বহন/গ্রহণ/সরবরাহে জড়িত থাকার অপরাধে ফৌজদারি মামলায় কারাগারে প্রেরণসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও এ সংক্রান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারা সদর দপ্তর নিজস্ব ভোপ টেস্টিং মেশিন সংগ্রহ করেছে।
তিনি বলেন, কারা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুনীতি এবং সব নিয়ম বহির্ভূত বিষয়েও আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। বিগত এক বৎসরে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বাধ্যতামূলক অবসর, ৩৪ জনকে চাকরিচ্যুত, ৪৪০ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ ১৭২ জনকে প্রশাসনিক কারণে বিভাগের বাইরে বদলি করা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পরিবার নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা স্কিম হতে সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুদবিহীন লোন সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।