শিরোনামঃ
পিআরের দাবিতে আন্দোলনকারীরা নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টায় নেমেছে: মির্জা ফখরুল পাল্টা হামলায় ৫৮ পাক সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এহসানুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা: চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু ইতালির উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা একা গিয়ে কী করবো, সেফ এক্সিট নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধের সুষ্ঠু ও নির্মোহ বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: বিএনপির বিবৃতি আর কোনো সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই : প্রেস সচিব পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাবাহিনী
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন

ক্ষমতা হারানোর ভয় না থাকলে যেকোন দল দানবে পরিণত হয়: আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

কোনো দল যখন মনে করে যে পাঁচ বছর পর ক্ষমতা হারাতে হতে পারে, তখন তারা ভয়ে হলেও খারাপ কাজ কম করে। কিন্তু যখন সেই ভয়টাই চলে যায়, তখন তারা দানবে পরিণত হয় বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) আয়োজিত ১১তম মানবাধিকার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিগত শাসনামলে আমরা দেখেছি, ক্ষমতা হারানোর ভয় না থাকলে একটি দল কীভাবে দানবে পরিণত হয়। যার পরিণতিতে হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, অনেকেই পঙ্গু হয়েছেন, অসংখ্য পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গ- নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগে সংস্কার আনতে হবে। এই তিন জায়গায় সমস্যা রেখে মানবাধিকার সুরক্ষা সম্ভব নয়। শুধু নতুন আইন তৈরি করলেই হবে না, বাস্তব কাঠামোয় হাত দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৯১ থেকে ২০১১-১২ সাল পর্যন্ত দেশে মোটামুটি ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার এসেছিল। যার কারণে আমরা কিছুটা হলেও ভালোর দিকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। শেখ হাসিনার শাসনামলে ২০১৩ সালের সময়েও অনেকগুলো মেয়র নির্বাচনে অন্য দলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন। তখন পর্যন্ত স্বচ্ছতা ছিল।’

অনেকে বলেন নির্বাচন মানেই কি সবকিছু নাকি এই কথা উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি যারা বলেন, তাদের দেখা উচিত বাংলাদেশে সেরা সময় কেটেছে ১৯৯১ থেকে ২০১২-১৩ পর্যন্ত। কারণ, তখন শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তর ছিল। এটি থাকলে জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকে। তখন দেশ ভালোর দিকে এগিয়েছে। আমাদের দলগুলোর প্রত্যেকের তো সমস্যা আছে। কোনো দল যখন চিন্তা করে পাঁচ বছর পর ক্ষমতা হারাব, তখন ভয়ে হলেও তারা খারাপ কাজ কম করবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন কম করে। কোনো দলের ক্ষমতা হারানোর ভয় চলে গেলে তারা দানবে পরিণত হয়। যেটা আমরা বিগত আওয়ামী শাসনামলে দেখলে বুঝতে পারি। যার কারণে এক হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু হয়ে যেতে হয়েছে। কত কঠিন ভয়াবহ মূল্য দিতে হয়েছে।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন এইচআরএসএস-এর চেয়ারপারসন শাহজাদা আল আমিন, মানবাধিকারকর্মী ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মো. নূর খান, জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের (ইউএনআরসিও) জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ একরামুল হক, ব্লাস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন এবং ঢাবির শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক সাইফুদ্দিন আহমেদ।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের এক বছর হতে চলেছে। কিন্তু আগের ফ্যাসিস্ট শক্তির যেসব কাজ আমরা সমালোচনা করতাম, এখন নিজেদের ভেতরেই সেগুলোর ছায়া দেখা যাচ্ছে। এটা থামাতে না পারলে গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে।’

সারা হোসেন বলেন, ‘এখন দুইটি কাজ সবচেয়ে জরুরি। এক-মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করা। দুই-ভবিষ্যতে কেন এমন লঙ্ঘন হয়, সেই কাঠামোগত কারণ চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধ করা।’

 


এ জাতীয় আরো খবর...