ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পলাতক কাজী মুস্তাফিজুর রহমানকে স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে এলাকায় ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সর্বত্রই প্রশ্ন-একজন পদধারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা কীভাবে এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন এবং বহাল রয়েছেন?
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,অভিযুক্ত মুস্তাফিজ ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ কহুমা গ্রামের কাজী আমির হোসেনের ছেলে। জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দলীয় পদে থাকা সত্ত্বেও তাকে গত ২৮ জানুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৭-এর সিনিয়র সহকারী সচিব সাইদুজ্জামান শরীফ স্বাক্ষরিত নিকাহ রেজিস্ট্রারের লাইসেন্স প্রদান করা হয়।
একই পদে আবেদনকৃত নিকাহ রেজিস্ট্রারের লাইসেন্স প্রার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা হয়েও সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে নিকাহ রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পেয়েছেন কাজী মুস্তাফিজুর রহমান
এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের লক্ষ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর কাজী মুস্তাফিজুর রহমান ও তার দ ‘ডামি প্রার্থীকে মনোনীত দেখিয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি প্যানেল পাঠানো হয়। প্যানেল তৈরির দিন অন্য কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন কর্তৃপক্ষের সামনে যেতে দেয়নি ছাত্রলীগের ক্যাডাররা।
পরবর্তীতে এ পদে নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থী নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়া হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়ার অভিযোগ, মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা কাজী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি শুনে আমি অবাক হই। কী করে এই নিয়োগ সম্ভব হয়েছে? বিষয়টি তদন্ত করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কাজী মুস্তাফিজুর রহমান নিয়োগে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। আদালত অবমাননা হয়েছে কি না, সেটা তারা বুঝবেন। আমি ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত’।
ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, ‘কাজী নিয়োগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। নিয়োগে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, আমার বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’