দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। সিআইডির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ২০১২ এর ৪ (২) (৪) ধারায় রাজধানীর গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি (মামলা নম্বর-১৪) দায়ের করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে- অর্থ পাচার করে রফিকুল ইসলাম অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ওই দেশের বিনিয়োগ স্কিমে ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে তিনি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান।
এদিকে সিআইডির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, রফিকুল ইসলাম এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর অধীনে তদন্ত চালানো হয়। তদন্তে জানাগেছে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি ক্রয় বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি গ্রহণ করে তা বিক্রি করত। ২০২২ সালের ৮ মার্চ রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দিপু বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে ৭ দশমিক ৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে, একই জমির ৬ দশমিক ৩৩৭৫ একর অংশ ২০২২ সালের ১ জুন ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের (বসুন্ধরা গ্রুপ) কাছে পুনরায় বিক্রি করে প্রতারণামূলকভাবে ৫৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা অর্জন করে। এছাড়াও, বালি ভরাটের ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করেন তারা। একইভাবে, ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেয় তারা। এসব অর্থ পাচার করে রফিকুল ইসলাম অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ওই দেশের বিনিয়োগ স্কিমে ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে তিনি নাগরিকত্ব পান। এসব তথ্যের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সিআইডি মামলাটি দায়ের করেছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-২ এর ১ লাখ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্পেস ক্রোক করা হয়েছে। এই মামলার অন্যান্য আসামিদের পরিচয় ও সম্পৃক্ততা অনুসন্ধান চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও সম্পত্তি ক্রোকের উদ্যোগ নেওয়া হবে।