ইতালির রোমে পৌঁছার একদিন পর মারা যাওয়া ফেনীর পরশুরামের সোহাগ দেওয়ান (৩২) এর মরদেহ এক সপ্তাহ পর দেশে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে কোলাপাড়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসলে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সোহাগের বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের আহাজারিতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় তার স্ত্রী ছবি দেওয়ান ও দেড় বছর বয়সী তানহা দেওয়ান কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পরিবার সূত্র জানায়, রোববার দিবাগত রাত বারোটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোহাগের মরদেহ এসে পৌঁছায়। পরিবারের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সকাল সাতটায় তার মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এরপর সকাল সাড়ে দশটায় নামাজে জানাজা শেষ দক্ষিণ কোলাপাড়া পারিবারিক কবরস্থানে তার জেঠা সাদেক দেওয়ানের কবরের পাশে সোহাগের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
সোহাগের বাবা মীরু দেওয়ান জানান, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ছোট ছেলে সোহাগের শ্বাসনালিতে ক্যান্সার ধরা পড়ায় চিকিৎসার জন্য সে ইতালি যায়। ইতালির হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ জানিয়েছেন সোহাগের শ্বাসনালির ১৫ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। ওষুধে সুস্থ হয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন:
এর আগে, ১৭ আগস্ট রাতে ইতালি পৌঁছার একদিন পরে বড় ভাইয়ের বাসায় অসুস্থ হয়ে মারা যান সোহাগ। পরদিন চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। পরিবারের সদস্যরা জানান, শ্বাসনালির ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য তিনি ইতালি যান।ইতালির হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে বড় ভাই বাবলু দেওয়ানের বাসায় পৌঁছলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ওই দিন রাতে তিনি মারা যান। নিহত সোহাগ দেওয়ান পৌর এলাকার মীরু দেওয়ানের ছোট ছেলে। ব্যক্তি জীবনে তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০০৯ সালে পারিবারিক ভাবে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন সোহাগ।
সোহাগের বড় বোন আয়েশা বলেন, সোহাগের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল ইতালি যাওয়ার। তবে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল শ্বাসনালির চিকিৎসা করানো। সেই স্বপ্নপূরণে ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বৈধপথে স্পন্সর ভিসার জন্য আবেদন করেন সোহাগ দেওয়ান। একই বছরের ২ জুলাই তার ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হয় ইতালিতে। পরবর্তী সময়ে ১৭ জুলাই ঢাকায় ইতালীয় দূতাবাসের ভিসা অফিস, ভিএফএস গ্লোবালে জমা দেন ভিসার আবেদনপত্র। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে, ২৮ জুলাই হাতে পান ইতালির ভিসা।
এ জাতীয় আরো খবর...