বাংলাদেশি মডেল শান্তা পালের নামে চারটি গাড়ি, দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। গেস্ট হাউস তৈরির জন্য ঋণও নিয়েছিলেন। বিক্রমগড়ে শান্তা পালের গ্রেপ্তারের পর তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে রহস্য। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে শান্তার চারটি গাড়ি রয়েছে। সেগুলো ব্যবসায় খাটানো হত। ওই গাড়িগুলো কার নামে কেনা হয়েছে, তাও তদন্ত করে দেখেছে পুলিশ। পাশাপাশি একটি গেস্ট হাউস কেনার পরিকল্পনা ছিল শান্তার। তার জন্য ব্যাংক ঋণও নিয়েছিলেন। তবে সেই ঋণ শান্তা নিজের নামে নেননি বলে অনুমান তদন্তকারীদের। কলকাতায় যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড় থেকে গ্রেপ্তার হন শান্তা। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ছিল দু’টি আধার কার্ড। একই আধার নম্বরে দু’টি কার্ড পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তার মধ্যে একটির ঠিকানা কলকাতার, অন্যটি বর্ধমানের।
এ ছাড়া বর্ধমানের ঠিকানায় শান্তার নামে একটি ভোটার কার্ডও পাওয়া গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তিনি বর্ধমানেও কখনও থেকেছেন কি না, বর্ধমান থেকে কেন কলকাতায় চলে এলেন, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। বর্ধমানের ঠিকানায় শান্তার যে ভোটার কার্ডটি পাওয়া গিয়েছে, সেটির তথ্য ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই ভোটার-নথির তথ্য যাচাই করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। শান্তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। গত কয়েক বছর ধরে যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২০২৩ সাল থেকে ওই বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। বাংলাদেশে শান্তা দু’টি প্রতিষ্ঠানে মডেল হিসাবে কাজ করতেন। বাংলাদেশি সিনেমাতেও কাজ করেছেন বলে দাবি।
২০১৯ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ভারতে এসে তেলুগু ছবিতে কাজ করেন শান্তা। কী ভাবে সেই সুযোগ মিলেছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, কলকাতায় গাড়ি ভাড়া দিতেন, পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবসাও করতেন শান্তা। সম্প্রতি তিনি পর্যটনের ব্যবসা শুরু করবেন বলে কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। গোয়েন্দারা জানান, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার এক বাসিন্দার সঙ্গে সেই সূত্রে পরিচয় হয় শান্তার। ওই ব্যক্তি পরে অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশের নাগরিক শান্তা সে দেশের পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসে ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে শহরে থাকছেন। এর পরেই শান্তাকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা।